পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার এবং পাকিস্তানে ভারতের প্রত্যাঘাতের পরে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে দেশের সেনাবাহিনীর জন্য শুভকামনা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার রবীন্দ্র সদনে তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ আয়োজিত রবীন্দ্রজয়ন্তীর অনুষ্ঠান থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বলেন, ‘‘যাঁরা সেনাবাহিনীতে রয়েছেন, আমাদের জন্য লড়াই করছেন, মাতৃভূমিকে রক্ষা করছেন, তাঁদের সকলকে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিবসে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।’’ রবীন্দ্রনাথের লেখা উদ্ধৃত করে সেনার উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা, ‘‘কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আমাদের শিখিয়েছেন, ‘নাই নাই ভয়, হবে হবে জয়, খুলে যাবে এই দ্বার…’, অথবা ‘আমি ভয় করব না ভয় করব না। দু’বেলা মরার আগে মরব না, ভাই মরব না’।’’
শুক্রবার রবীন্দ্রনাথের ১৬৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সমাজমাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, ‘‘শুধু ২৫শে বৈশাখ নয়, প্রতিদিনই আমরা তাঁকে স্মরণ করি। আমাদের দিশায়, আমাদের ভাষায়, আমাদের আশায়— সব কিছুতেই তিনি! সারা বিশ্ব তাঁর সৃষ্টির আলোকে আলোকিত।’’ একই কথা তিনি বলেন রবীন্দ্র সদনে রবীন্দ্রজয়ন্তীর অনুষ্ঠান থেকেও। তাঁর কথায়, ‘‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছাড়া আমরা কিছু ভাবতে পারি না। আমাদের সকাল-বিকেল, সন্ধ্যা-নিশীথ রাত, আমাদের দুর্যোগ থেকে দুর্ভোগ, সুখ থেকে দুঃখ, সব কিছুতেই বিশ্বকবির কাছ থেকে কিছু না কিছু শিক্ষা পাই।’’
যদিও বর্তমানে বাঙালির রবীন্দ্রচর্চা কমে আসছে বলেও আক্ষেপ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘রবীন্দ্রনাথের জন্মদিনে রবীন্দ্রচর্চা করি বটে, কিন্তু অন্যান্য দিনে তাঁর চর্চা কমিয়ে দিয়েছি। এগুলো খারাপ লাগে। এমনকি সিরিয়ালগুলিতেও দেখি…।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘প্রত্যেক রাজ্যের নিজস্ব ভাষা-সংস্কৃতি আছে। সবাইকে নিয়ে চলা, সবাইকে সম্মান দেওয়ার শিক্ষাই আমরা কবিগুরুর কাছ থেকে পাই।’
দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারির নির্দেশ
ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সব রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে জরুরি অবস্থাকালীন ক্ষমতা বলবৎ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার দেশের সব রাজ্যের মুখ্যসচিব এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের প্রশাসকদের এ সংক্রান্ত চিঠি দেওয়া হয়েছে। এতে ১৯৬৮ সালের অসামরিক প্রতিরক্ষা বিধির ১১ ধারায় প্রদত্ত জরুরি অবস্থার ক্ষমতা জারি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাধারণত যুদ্ধ পরিস্থিতির মতো জরুরি পরিস্থিতিতে জরুরি অবস্থা জারির ক্ষমতা পায় রাজ্য। জনগণকে রক্ষা করা, সম্পত্তির সুরক্ষা এবং বিদ্যুৎ, জল ও পরিবহনের মতো প্রয়োজনীয় পরিসেবা চালু রাখার জন্য এ ক্ষমতা প্রদান করা হয়।
১১ ধারায় কী আছে?
ভারতের প্রতিরক্ষা বিধির ১১ ধারা অনুযায়ী বেশকিছু বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়া আছে। এ ধারায় রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল কী কী করতে পারে তাও উল্লেখ করা আছে। সেগুলো হলো :
- এ ধারায় রাজ্য জনগণ এবং সম্পত্তি রক্ষায় প্রয়োজনমতো জরুরি পদক্ষেপের ক্ষমতা পায়।
- জরুরি পরিস্থিতিতেও পানি, বিদ্যুৎ, হাসপাতাল পরিসেবা এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা সচল রাখতে রাজ্যের যে কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার সক্ষমতা।
- অসামরিক প্রতিরক্ষার জন্য যদি কোনো সরঞ্জাম কেনার প্রয়োজন পড়ে নিয়ম ছাড়াই তা করার ক্ষমতা।