রাতভর বৃষ্টিতে নগরের অক্সিজেন ২ নম্বর গেইট সড়কের স্টারশিপ এলাকায় শীতল ঝরনা খালের ওপর ব্রিজ ভেঙে সড়কের একপাশে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
বুধবার (৬ আগস্ট) দিবাগত রাতে পানির ঢলে ব্রিজটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
বৃহস্পতিবার ভোরে ব্রিজের দুই পাশ থেকে মাটি সরে গিয়ে সড়ক দুই ভাগ হয়ে যায়।
সরেজমিন দেখা যায়, বর্তমানে সড়কের এক পাশ দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করছে।সড়ক ভেঙে যাওয়ায় লাল ফিতা দিয়ে বেস্টনি তৈরি করে রাখা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) সেতুটি ধসে পড়ার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন সেতুটি পুনর্নির্মাণের ঘোষণা দেন।
পরিদর্শনকালে মেয়র জানান, এই সেতুটি প্রায় ৫০ বছর পুরোনো। আমরা বর্ষার পরে এই প্রকল্পের কাজ শুরুর পরিকল্পনা করেছিলাম।
প্রকল্পটির ব্যয় হতে পারে আট থেকে নয় কোটি টাকা। বর্ষা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা কাজ শুরু করব।
তিনি বলেন, এটি এক বছরের মধ্যে নির্মাণ করা হবে। পুরোনো সেতুটির জায়গায় ২০ ফুট প্রশস্ত ব্রিজের পরিবর্তে ৬০ ফুট প্রশস্ত একটি নতুন ব্রিজ নির্মাণ করা হবে, যাতে ভবিষ্যতে ভারী যানবাহনের চাপেও সেটি ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
এ সময় মেয়র জনগণকে সাময়িক ভোগান্তির জন্য দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আমরা ট্রাফিক বিভাগকে অনুরোধ করেছি ভারী যান চলাচলের জন্য বিকল্প রুট নির্ধারণ করতে। ডিসি ট্রাফিক এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ইতিমধ্যেই নাসিরাবাদ হয়ে একটি অল্টারনেটিভ রোড প্রস্তুত করেছেন, যেখানে ভারী যানবাহনগুলো চলবে। অক্সিজেন এলাকা দিয়ে শুধু হালকা যান চলাচল করবে।
বায়েজিদ থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) সামশুল আলম জানান, সড়ক ভেঙে যাওয়ায় যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। কোনো দুর্ঘটনা যাতে না ঘটে, সেজন্য পুলিশের একটি টহল টিম দায়িত্ব পালন করছে।
যান চলাচলে ধীর গতির কারণে অক্সিজেন ২ নম্বর গেইট সড়কের উভয়পাশে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়গামী শাটল ও নাজিরহাট রুটে ট্রেন চলাচলও বিঘ্নিত হচ্ছে।
১৯৮০ সালে শীতল ঝরনা খালের ওপর ব্রিজটি নির্মাণের পর সম্প্রতি জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের আওতায় খাল প্রশস্ত করার কারণে ওই সড়ক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ব্রিজটি সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে।
এদিকে আমবাগান আবহাওয়া অফিসের তথ্যানুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় (সকাল ৯টা পর্যন্ত) নগরে ৮১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসে রেকর্ড করা হয় ৩২ মিলিমিটার বৃষ্টি। ভোর ৬টার আগে তিন ঘণ্টায় ১২৫ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয় সীতাকুণ্ডে।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) সকালে এ তথ্য জানিয়েছেন পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান। আগামী ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান তিনি।
এদিকে ভারী বর্ষণের ফলে নগরের বিভিন্ন নিচু এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে বিপাকে পড়েন অফিস ও স্কুলগামীরা। বৃষ্টির ফলে সড়কে যানবাহনের পরিমাণ কম থাকায় রাস্তার মোড়ে মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে নগরবাসীকে।